👁️ LASIK চোখের অপারেশন – কারা করতে পারবেন?
ভূমিকা: ল্যাসিক সার্জারি কী?
LASIK (Laser-Assisted In Situ Keratomileusis) হলো একটি জনপ্রিয় লেজার সার্জারি পদ্ধতি, যা চশমা বা কন্ট্যাক্ট লেন্সের উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করে। এই অপারেশনের মাধ্যমে চোখের কর্নিয়ার আকৃতি পরিবর্তন করা হয়, যাতে আলো রেটিনার ওপর সঠিকভাবে ফোকাস করতে পারে। তবে, প্রত্যেকেই এই অপারেশনের জন্য যোগ্য নন।
✅ LASIK অপারেশনের জন্য আবশ্যক যোগ্যতা
সাধারণত, ল্যাসিক সার্জারির জন্য যোগ্য হওয়ার আগে বেশ কিছু কঠোর মানদণ্ড পূরণ করতে হয়:
১. বয়সের মানদণ্ড
- ন্যূনতম বয়স: প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। তবে অধিকাংশ সার্জন ২০-২১ বছর বয়সের আগে অপারেশন করতে চান না।
২. চোখের পাওয়ারের স্থিতিশীলতা
- স্থির পাওয়ার: অপারেশনের আগে কমপক্ষে **এক বছর** ধরে চোখের পাওয়ার (চশমার নম্বর) পরিবর্তন হয়নি বা স্থিতিশীল আছে। এটি নিশ্চিত করে যে পাওয়ার আরও বাড়বে না।
৩. পাওয়ারের সীমাবদ্ধতা (Refractive Error Range)
LASIK নিম্নলিখিত দৃষ্টি ত্রুটিগুলোর জন্য সাধারণত উপযুক্ত:
- মায়োপিয়া (নিকট-দৃষ্টি): সাধারণত -০.৫ থেকে -১০.০০ ডায়োপ্টার পর্যন্ত।
- হাইপারমেট্রোপিয়া (দূর-দৃষ্টি): সাধারণত +০.৫ থেকে +৫.০০ ডায়োপ্টার পর্যন্ত।
- অ্যাস্টিগমাটিজম (বক্রতা): সাধারণত ৪.০০ ডায়োপ্টার পর্যন্ত।
৪. কর্নিয়ার স্বাস্থ্য
- কর্নিয়ার যথেষ্ট পুরুত্ব: কর্নিয়া যথেষ্ট পুরু হতে হবে, যাতে লেজার প্রয়োগের পরেও কর্নিয়ার অবশিষ্ট স্তর নিরাপদ থাকে।
- কর্নিয়ার সুস্বাস্থ্য: কর্নিয়ায় কোনো সংক্রমণ, আঘাত বা রোগ (যেমন কেরাটোকোনাস) থাকা চলবে না।
❌ কারা LASIK অপারেশনের জন্য যোগ্য নন?
নিম্নলিখিত শর্তাবলী থাকলে সাধারণত LASIK অপারেশন করা যায় না:
- অস্থির চোখের পাওয়ার: যাদের পাওয়ার ঘন ঘন পরিবর্তিত হয়।
- নির্দিষ্ট চোখের রোগ: যাদের গ্লুকোমা, ছানি, মারাত্মক শুষ্ক চোখ (Severe Dry Eyes), বা চোখের সংক্রমণ আছে।
- শারীরিক অসুস্থতা: ডায়াবেটিস (যদি অনিয়ন্ত্রিত থাকে), রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা অন্যান্য অটোইমিউন রোগ থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
- গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলা: এই সময়কালে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে চোখের পাওয়ার বা কর্নিয়ার আকৃতি সাময়িকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।
- অপেক্ষাকৃত পাতলা কর্নিয়া: কর্নিয়া খুব পাতলা হলে লেজার প্রয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
💡 প্রথম পদক্ষেপ: বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও পরীক্ষা
LASIK-এর জন্য যোগ্য কিনা, তা নিশ্চিত করতে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞকে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রাক-অপারেশন পরীক্ষা করানো আবশ্যক। এই পরীক্ষায় কর্নিয়ার টপোগ্রাফি, চোখের চাপ পরিমাপ এবং চোখের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
👉 মনে রাখবেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই নেবেন।
Leave Your Comment