News Details

Details
  • October 18,2025

গ্লুকোমা (Glaucoma) রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও চিকিৎসা

🏆 গ্লুকোমা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও চিকিৎসা | অন্ধত্ব থেকে বাঁচুন

👁️ গ্লুকোমা (Glaucoma) রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও চিকিৎসা

গ্লুকোমা কী? (দৃষ্টিশক্তির নীরব ঘাতক)

গ্লুকোমা হলো এমন একটি রোগ, যেখানে চোখের অভ্যন্তরে চাপ (Intraocular Pressure - IOP) বেড়ে যাওয়ার কারণে দৃষ্টির স্নায়ু (Optic Nerve) ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দৃষ্টি স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রথমে পাশের দিকের দৃষ্টি বা পেরিফেরাল ভিশন (Peripheral Vision) কমতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত রোগী অন্ধ হয়ে যেতে পারে। যেহেতু এটি প্রায়শই কোনো প্রাথমিক ব্যথা বা সুস্পষ্ট লক্ষণ দেখায় না, তাই একে 'দৃষ্টিশক্তির নীরব ঘাতক' বলা হয়।

⚠️ গ্লুকোমা রোগের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ

গ্লুকোমার লক্ষণগুলো এর প্রকারভেদের উপর নির্ভর করে।

১. ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা (সবচেয়ে সাধারণ)

এটি সাধারণত কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখায় না। রোগী দৃষ্টিশক্তি হারানোর অনেক পরে সমস্যাটি টের পান।

  • দীর্ঘ সময় ধরে দৃষ্টির ক্ষেত্র (Peripheral Vision) ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হওয়া।
  • রাতে দেখতে বা অন্ধকারে মানিয়ে নিতে সমস্যা হওয়া।
  • পরে, কেন্দ্রীয় দৃষ্টিশক্তি (Central Vision) ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২. অ্যাকিউট অ্যাঙ্গেল ক্লোজার গ্লুকোমা (জরুরি অবস্থা)

এটি হঠাৎ এবং তীব্রভাবে আক্রমণ করে এবং দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন।

  • চোখে তীব্র ব্যথা।
  • দৃষ্টিশক্তি হঠাৎ ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
  • আলোর চারপাশে রংধনু বা আলোর বলয় দেখা।
  • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
  • চোখ লাল হয়ে যাওয়া।

📈 গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকির কারণ

  • বয়স: ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ঝুঁকি বেশি।
  • পারিবারিক ইতিহাস: পরিবারের কারও গ্লুকোমা থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
  • উচ্চ চোখের চাপ: উচ্চ ইন্ট্রাওকুলার প্রেশার।
  • ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিক রোগীদের ঝুঁকি বেশি।
  • মায়োপিয়া (Myopia): অতিরিক্ত নিকট-দৃষ্টি বা মাইনাস পাওয়ার।

💉 গ্লুকোমা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা

গ্লুকোমা রোগ একবার শুরু হলে হারানো দৃষ্টিশক্তি আর ফিরে পাওয়া যায় না। তবে সময়মতো রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করলে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং দৃষ্টির আরও ক্ষতি রোধ করা সম্ভব।

১. রোগ নির্ণয় (Diagnosis)

  • টোনোমেট্রি (Tonometry): চোখের চাপ পরিমাপ করা।
  • ভিজ্যুয়াল ফিল্ড টেস্ট: পেরিফেরাল দৃষ্টি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পরীক্ষা করা।
  • অপটিক নার্ভ পরীক্ষা: দৃষ্টি স্নায়ুর ক্ষয় পরীক্ষা করা।

২. চিকিৎসা পদ্ধতি

  • আই ড্রপ (Eye Drops): চোখের চাপ কমানোর জন্য নির্দিষ্ট ড্রপ ব্যবহার করা হয়। এটিই প্রাথমিক চিকিৎসা।
  • লেজার চিকিৎসা: চোখের নিষ্কাশন ব্যবস্থা (Drainage System) উন্নত করার জন্য লেজার ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন: সিলেক্টিভ লেজার ট্র্যাবেকুলোপ্লাস্টি (SLT)।
  • সার্জারি (Surgery): যখন ড্রপ ও লেজার কার্যকর না হয়, তখন সার্জারির প্রয়োজন হয়। যেমন: ট্র্যাবেকুলেক্টমি (Trabeculectomy) বা গ্লুকোমা ড্রেনেজ ডিভাইস স্থাপন।

⭐ নিয়মিত পরীক্ষা গ্লুকোমা প্রতিরোধের চাবিকাঠি

গ্লুকোমার গুরুতর লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই রোগটি ধরতে পারার একমাত্র উপায় হলো নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করা।

  • ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের প্রতি ২-৪ বছর অন্তর চক্ষু পরীক্ষা করা উচিত।
  • ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি (যেমন পারিবারিক ইতিহাস থাকলে) ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের আরও ঘন ঘন পরীক্ষা করা উচিত।

উপসংহার

গ্লুকোমা থেকে অন্ধত্ব এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে থাকা। চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলে আপনি আপনার বর্তমান দৃষ্টিশক্তি দীর্ঘকাল ধরে রক্ষা করতে পারবেন।

Leave Your Comment

Popular Post

For Emergency Call

Please call 01770408060 for booking appointments, knowing chamber time & details information about our elite panel of experienced consultant eye specialists & surgeons of Bangladesh.

Book An Appointment